21204598-768x396

ড্রাইভিং লাইসেন্স কীভাবে- লাইসেন্সের প্রকারভেদ: প্রকারভেদ অনুযায়ী লাইসেন্স ৫ প্রকার।

 

যথা:-

 

• শিক্ষানবীশ লাইসেন্স

 

• পেশাদার লাইসেন্স

 

• অপেশাদার লাইসেন্স

 

• পি.এস. ভি লাইসেন্স

 

• ইনস্ট্রাকটর লাইসেন্স

 

প্রকারভেদ অনুযায়ী লাইসেন্স ৫ প্রকার হলেও শিক্ষানবীশ লাইসেন্স, পেশাদার লাইসেন্স এবং অপেশাদার লাইসেন্সই বেশি প্রচলিত।

 

নিম্নে এ সম্মন্ধে বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হলো-যে ধরণের ব্যক্তিগণ লাইসেন্স প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন:-

 

• সর্বনিম্ন ১৮ বছর বয়স্ক ব্যক্তি অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।

 

• সর্বনিম্ন ২০ বছর বয়স্ক ব্যক্তি পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।

 

• পেশাদার এবং অপেশাদার লাইসেন্স প্রাপ্তির ক্ষেত্রে যাদের বয়স (২০/১৮) নির্ধারিত বয়স অপেক্ষা কম এবং যিনি কমপক্ষে অষ্টম শ্রেনী বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নন।

 

• ক্ষিপ্রতা গ্রস্ত ব্যক্তি ও মৃগী রোগী

 

• বধিরতা

 

• যিনি রাতকানা রোগগ্রস্ত

 

• হৃতরোগী

 

• বর্ণান্ধ

 

• যে সকল ব্যক্তি শারিরীক অক্ষমতা/শারিরীক স্বল্পতা/ ত্রুটির কারণে গাড়ী চালনায় অযোগ্য।

 

ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তির নিয়মঃ-

 

শিক্ষানবীশ ড্রাইভিং লাইসেন্সঃ মূল ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার পূর্বে আপনাকে শিক্ষানবীশ ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে হবে। শিক্ষানবীশ ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন ফরম http://www.brta.gov.bd থেকে ডাউনলোড করে নিন অথবা লাইসেন্সিং অথরিটি (সহকারী পরিচালক, বিআরটিএ) থেকেও সংগ্রহ করতে পারেন।

 

তারপর ওই ফরম যথাযথভাবে পুরণ করে নিম্নোক্ত কাগজপত্র সহ সংশ্লিষ্ট লাইসেন্সিং অথরিটির কাছে জমা দিতে হবে।

 

প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ-

 

১. বয়সের প্রমানপত্র: স্কুল সার্টিফিকেট/পাসপোর্ট/জন্মনিবন্ধন সনদ/জাতীয় পরিচয় পত্রের সত্যায়িত কপি (যে কোন একটি)। পেশাদার লাইসেন্সের ক্ষেত্রে প্রার্থীর বয়স ২০ বছর এবং অপেশাদার লাইসেন্সের ক্ষেত্রে প্রার্থীর বয়স ১৮ বছর হতে হবে।

 

২. জাতীয়তার প্রমানপত্র: জাতীয় পরিচয় পত্র/পাসপোর্ট/ সিটি কর্পোরেশন/ পৌরসভা/ ইউনিয়ন পরিষদের সার্টিফিকেটের সত্যায়িত কপি। এক্ষেত্রে ১নং এ যা দিয়েছেন, ২নং এ সেটি না দেয়াই ভালো।

 

৩. ঠিকানার যাচাইপত্র: আবারও জাতীয় পরিচয়পত্র/ পাসপোর্ট/ পানি/ গ্যাস/ বিদ্যুৎ বিলের সত্যায়িত কপি। (আমার মতে, একটি জাতীয় পরিচয়পত্র / পাসপোর্ট এর কপিই উপরোক্ত ৩টি কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। এখানেই একজনের প্রয়োজনীয় সব তথ্য থাকে। তারপরও যাদের এসব নেই, তাদের জন্য বাকি অপশনগুলো।)

 

৪. রেজিস্টার্ড ডাক্তার কর্তৃক আবেদনকারীর ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবিসহ নির্ধারিত ফরমে মেডিক্যাল সাটিফিকেট জমা দিতে হবে। এই ফরম http://www.brta.gov.bd এই সাইট থেকে বা বিআরটিএ এর অফিসে পাওয়া যাবে।

 

৫. ৩ কপি স্ট্যাম্প সাইজের রঙ্গিন ছবি।

 

৬. নির্ধারিত ফি: পেশাদার – ৩৪৫/= টাকা, অপেশাদার – ৫১৮/= টাকা বিআরটিএ’র নির্ধারিত ব্যাংকে জমাদানের রশিদ (ব্যাংক এর তালিকা http://www.brta.gov.bd এখানে পাওয়া যাবে।)

 

শিক্ষানবীশ ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার পদ্ধতিযে কোন ব্যক্তিকে শিৰানবীশ ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে হলে নিম্নলিখিতভাবে অগ্রসর হতে হবে :

 

১. বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বি.আর.টি.এ) অফিস হতে ছাপানো নির্ধারিত আবেদন ফরমে আবেদন করতে হবে।

 

২. একজন রেজিস্ট্রার্ড ডাক্তার কর্তৃক শারীরিক ফিটনেস সার্টিফিকেট ও রক্তের গ্রুপ ফর্মে উল্লেখ থাকতে হবে।

 

৩. নির্ধারিত আবেদন ফিস স্হানীয় পোস্ট অফিসে জমা দিতে হবে।

 

৪. আবেদন পত্র সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের তিনকপি ছবিসহ বি আর টি এ অফিসে জমা দিতে হবে।

 

আবেদনপত্র পাওয়ার পর লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ আবেদন পত্রের যথার্থতা বিবেচনাক্রমে ৩ (তিন) মাসের জন্য শিক্ষানবীশ ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করে থাকেন। অতঃপর লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ প্রদত্ত নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী লিখিত, মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে হবে।

 

শিক্ষানবিস ফিঃ

 

একটি যানের জন্য ৩৪৫ টাকা(১৫% ভ্যাটসহ)।

 

দু’টি (গাড়ি ও মোটরসাইকেল) যানের জন্য ৫১৮ টাকা (১৫% ভ্যাটসহ)।

 

লার্নার নবায়ন ফি ৮৭ টাকা (১৫% ভ্যাটসহ)।

 

শিক্ষানবিস থেকে পূর্ণমেয়াদের লাইসেন্স পাওয়ার জন্য নির্ধারিত পরীক্ষা দিতে হয়। এর জন্যও রয়েছে আলাদা ফি।

 

অপেশাদার লাইসেন্স ফি : ২,৩০০ টাকা (১৫% ভ্যাটসহ)।

 

পেশাদার লাইসেন্স ফি : ১,৪৩৮ টাকা (১৫% ভ্যাটসহ)।

 

একজন চালককে ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে হলে যে সমস্ত পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে হয় তা হলো:

 

ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে হলে লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের দেয়া শিক্ষানবীশ ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ কালের মধ্যে ধার্যকৃত ফিস জমা দিয়ে নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হবে। আবেদন পত্র পাওয়ার পর লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ প্রদত্ত নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী লিখিত, মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে হবে।

 

অর্থাৎ আবেদনকারীকে-

 

ক. লিখিত পরীক্ষা

 

খ. মৌখিক পরীক্ষা

 

গ. ব্যবহারিক পরীক্ষা অংশ গ্রহণ করতে হবে।

 

লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরে মটর যানের যে শ্রেণীর (মটর কার, মটর সাইকেল বা হালকা/ভারী) জন্য আবেদন করেছে সে শ্রেণীর গাড়ী নিয়ে বি.আর.টি.এ অফিসের নির্ধারিত স্হানে (জেলা পর্যায়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট/১ম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে) ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে হবে।

 

ব্যবহারিক পরীক্ষা ৩ (তিন) টি ধাপে সম্পন্ন হয়ে থাকে। যথাঃ

 

ক. জিগ জ্যাগ টেস্ট

 

খ. র‌্যাম্প টেস্ট

 

গ. রোড টেস্ট : এসব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে লাইসেন্সিং কর্তৃপৰ আপনাকে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করবেন।

 

এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, মধ্যম ও ভারী যানবাহনের লাইসেন্স পেতে হলে অবশ্যই আবেদনকারীর হালকা মটরযানের লাইসেন্স থাকতে হবে এব তিন বছর পার না হলে উক্ত প্রকার লাইসেন্সের জন্য আবেদন করা যাবে না।

 

ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার পরীক্ষা পদ্ধতি :

 

তিনটি বিষয়ের উপরে লিখিত পরীক্ষা দিতে হয়।

 

যথা :

 

ক. রোড সাইন, ট্রাফিক সিগন্যাল ও ট্রাফিক চিহ্ন,

 

খ. ট্রাফিক নিয়মাবলী,

 

গ. মটরযান ও ইহার ইঞ্জিন সংক্রান্ত প্রাথমিক জ্ঞান বিষয়ে।

 

প্রশ্ন : লিখিত পরীক্ষা কত সময় দেয়া হয় এবং পরীক্ষায় পাশের শতকরা হার কত ?

 

উত্তর : সাধারণতঃ লিখিত পরীক্ষায় ২৫-৩০ মিনিট সময় দেওয়া হয় এবং শতকরা ৬৬% নম্বর পেলে উত্তীর্ণ হওয়া যায়।

 

প্রশ্ন : লিখিত পরীক্ষায় কি ধরনের প্রশ্ন থাকে ?

 

উত্তর : উপরোক্ত বিষয়ের উপর ছোট ছোট প্রশ্ন থাকে। যাতে স্বল্প কথায় উত্তর দেওয়া যায়। উত্তর দেওয়ার জন্য প্রত্যেক প্রশ্নের নিচেই ফাঁকা জায়গা থাকে এবং সেখানেই উত্তর লিখতে হয় অথবা প্রশ্ন পত্রে কয়েকটি উত্তর দেওয়া থাকে সঠিক উত্তরের পাশ্বে টিক দিতে হয়।

 

প্রশ্ন : কি কি বিষয়ের উপর মৌখিক পরীক্ষা দিতে হয় ?

 

উত্তর : রোড সাইন, ট্রাফিক সিগন্যাল ও ট্রাফিক চিহ্ন, ট্রাফিক নিয়মাবলী বাস্তবে চিহ্নিত করতে পারে কিনা এবং মটরযান ও ইহার ইঞ্জিন সংক্রান্ত প্রাথমিক জ্ঞান আছে কিনা। তদুপরি বয়স ও শারীরিক দিক হতে উপযুক্ত কিনা ইত্যাদি বিষয়ে মৌখিক পরীক্ষয় প্রশ্ন করা হয়।

 

প্রশ্ন : প্রাকটিক্যাল টেস্ট বা মাঠ পর্যায়ের পরীক্ষা কি ভাবে হয় ?

 

উত্তর : পরীক্ষার্থী মটরযানের যে শ্রেণীর জন্য লাইসেন্স পেতে চায় সেই শ্রেণীর গাড়ী দিয়েই মাঠে প্রাকটিক্যাল টেস্ট দিতে হয়। এ প্রাকটিক্যাল টেস্টে ইঞ্জিন চালু করা, গিয়ার পরিবর্তন করা, সিগন্যাল লাইট ব্যবহার করা,

 

গাড়ী থামানো, সামনে অগ্রসর হওয়া ও পিছনের দিতে সুষ্ঠুভাবে চালাতে পারে কিনা তা পরীক্ষা করা হয়। মাঠ পর্যায়ে পরীক্ষা ১ম ধাপ হচ্ছে জিগজাগ টেস্ট। মাঠে যে আঁকা বাকা রাস্তা মার্কিং করা থাকে তার ভিতর দিয়ে গাড়ী নিয়ে অগ্রসর হওয়ার নাম জিগজাগ টেস্ট।

 

* ড্রাইভিং লাইসেন্স হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হলে কিংবা ছিড়ে গেলে ‘ইস্যুকরণ পদ্ধতিঃ-

 

’ড্রাইভিং লাইসেন্স হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হলে কিংবা ছিড়ে গেলে লাইসেন্সধারীকে নির্ধারিত ফরমে সাদা কাগজে প্রয়োজনীয় ফিস পোস্ট অফিসে জমা দিয়ে লাইসেন্স পূর্ণ বিবরণাদি উল্লেখপূর্বক যে লাইসেন্সিং অথরিটি কর্তৃক ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু করা হয়েছিল তার বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে লাইসেন্সিং অথরিটির নিকট ৩ (তিন) কপি পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত ছবিসহ আবেদন দাখিল করতে হবে।

 

লাইসেন্স হারিয়ে বা পুড়ে গেলে সংশ্লিষ্ট থানায় সাধারণ ডাইরি (জিডি এন্ট্রি) করতে হবে এবং তার একটি সত্যায়িত অনুলিপি আবেদন পত্রের সাথে সংযুক্ত করতে হবে।

 

এছাড়া দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে এবং সেই বিজ্ঞপ্তির তারিখ আবেদন পত্রে উল্লেখসহ উক্ত পত্রিকার নির্দিষ্ট স্হানটি চিহ্নিত করে আবেদন পত্রের সাথে সংযুক্ত করতে হবে। আবেদন পত্র সঠিক বিবেচিত হলে লাইসেন্সধারীর অনুকুলে একটি প্রতিলিপি ইস্যু করা হবে।